
EEE Full Meaning :
ইঞ্জিনিয়ারিং এর অনেকগুলো সাবজেক্ট এর মধ্যে একটি হচ্ছে তড়িৎ প্রকৌশল। যাকে ইংরেজিতে বলা হয় Electrical and Electronic Engineering or EEE। এখন অনেকের মনে কনফিউশন আসতে পারে যে তাহলে EECE কি? কেনই বা এর নাম EECE. আসলে EEE আর EECE একই সাবজেক্ট শুধু MIST তে EECE বলে আর বাকি সব জায়গায় EEE. সিলেবাস, কারিকুলাম সবই এক। ইইসিই হচ্ছে MIST এর টপ ডিমান্ডিং সাবজেক্ট গুলোর মধ্যে একটি। যে সকল বিষয়ের ব্যাপক চাহিদা অতীতেও ছিল, বর্তমানেও আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে এবং সবচেয়ে পুরনো এবং প্রচলিত ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়গুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে ইইসিই।
চারপাশে তাকালেই তুমি বুঝতে পারবে যে বিদ্যুৎ ছাড়া পুরো দুনিয়া অচল এবং গোটা সভ্যতাই এর উপর নির্ভরশীল আর এ বিদুৎ নিয়ে কাজ করে হচ্ছে ইইসিই এর ইঞ্জিনিয়াররা।
এখন তুমি কিভাবে বুঝবে যে ইইসিই বিষয়টি তোমার জন্য। তোমার যদি ছোটবেলা থেকে এই আগ্রহ থেকে থাকে যে কিভাবে বাসার ফ্যান, লাইট,টিভি এগুলো চলে কিংবা তুমি যদি ছোটবেলায় এটা ভেবে অবাক হতে যে কিভাবে ব্যাটারির সাহায্যে একটি খেলনা গাড়ি নিজে নিজে চলছে অথবা তোমার যদি ইন্টার লাইফে সার্কিট সলভ করতে ভাল লেগে থাকে, মোট কথা তোমার যদি এপ্লাইড ফিজিক্সের প্রতি আগ্রহ থাকে তাহলে ইইসিই তোমার জন্য পারফেক্ট সাবজেক্ট। এখানে তুমি তোমার জ্ঞ্যান কে কাজে লাগয়ে নিজের প্রতিভার বিকাশ খুব সহজেই করতে পারবে।
এবার আসা যাক ইইসিই বিষয়টিতে আসলে কি পড়ানো হয়। অনেকে মনে করে থাকে যে ইইসিই তে শুধু সার্কিট-ই সলভ করতে হয় কিন্তু ধারনা টা পুরোপুরি সঠিক নয়। হ্যা এটা ঠিক যে অনেক বড় একটা অংশ জুড়ে সার্কিট রয়েছে কিন্তু এর বাইরেও রয়েছে শেখা এবং জানার অনেক কিছু।
মূলত ৩ টি ডিসিপ্লিনের আন্ডারে ইইসিই পরানো হয়ে থাকে।
১. পাওয়ার
২. ইলেকট্রনিকস
৩. কম্যুনিকেশন
প্রথমে আসি পাওয়ার নিয়ে। আমাদের চারপাশের যে লাইট, ফ্যান, টিভি সহ যত প্রকার যন্ত্রপাতি দেখা যায় সবকিছু চালনা করতেও বৈদ্যুতিক শক্তি বা পাওয়ার দরকার হয়ে থাকে। এই পাওয়ার Production, Collection এবং Distribution এর কাজটি করে থাকে ইলেকট্রিকাল ইঞ্জিনিয়াররা।
ইলেকট্রনিকস এর কথা নতুন করে আর কি বলব। সামান্য সেমিকন্ডাক্টর থেকে অসামান্য সকল ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস যেমন মোবাইল, ল্যাপটপ তৈরি করার কাজটি করে থাকে ইলেকট্রনিকস ইঞ্জিনিয়াররা। যারা রোবটিক্স নিয়ে আগ্রহী তাদের এই পার্ট টুকু খুবই ভাল লাগবে। মাইক্রোকন্ট্রোলার এর নাম হয়ত অনেকে শুনেছো। এটা হচ্ছে একটি ইলেকট্রনিক ডিভাইস যা রোবটিক্স এ কাজ করার প্রথম ধাপ।
আমরা যে মোবাইল ডাটা কিংবা ওয়াইফাই চালাই অথবা ইন্টারনেট জগৎ এ বিচরণ করি কিংবা রেডিও শুনি কখনো প্রশ্ন আসেনি যে এগুলো কিভাবে সম্ভব? প্রাথমিক ভাবে কাল্পনিক মনে হলেও এটা সম্ভব হয়েছে কম্যুনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারদের মাধ্যমে।
BSc In EEE :
প্রথম এবং দ্বিতীয় বর্ষে ইইসিই এর কিছু ইন্ট্রোডাক্টকরি কোর্স এর সাথে তোমাকে পড়তে হবে ব্যাসিক ফিজিক্স, ক্যামিস্ট্রি, ম্যাথ, ইংরেজি, সোশিয়লজি, ইকোনমিক্স, একাউন্টিং, মেকানিকাল, কম্পিউটার প্রোগ্রামিং ইত্যাদি। এছাড়া ইইসিই তে যা পড়ানো হবে তার মধ্যে কয়েকটি হচ্ছে,
1. Electric Circuits
2. Electronics
3. Electrical Machines
4. Electromagnetics
5. Continuous signals and linear systems
6. Digital Electronics
7. Power System
8. Electrical Measurement and Instrumentation
9. Electrical Properties of Material
10. Microprocessor and Interfacing
11. Communication theory
12. Digital Signal Processing
13. VLSI
14. Solid State Device
15. Control System
এছাড়াও আরো অনেককিছু পড়ানো হয়, আপাতত এতটুকুই জেনে রাখো।
Lab Facility In MIST For EECE :
ইঞ্জিনিয়ারিং হচ্ছে একটি প্রায়োগিক বিজ্ঞান তাই এখানে প্রচুর ল্যাবওয়ার্ক করতে হয়। MIST এর ল্যাব ফ্যাসিলিটিস দেশের মধ্যে অন্যতম সেরা। MIST তে EECE এর অধীনে যেসব ল্যাব আছে তা হচ্ছে,
1. Electronics and digital electronics laboratory
2. Power electronics laboratory
3. Analog and digital communication laboratory
4. VLSI Laboratory
5. Numerical technical laboratory
6. Digital signal processing laboratory
7. Electrical and electronic simulation laboratory
8. Computer programming and networking laboratory
9. Data acquisition laboratory
10. Microprocessor and Interfacing laboratory
11. Electrical circuit laboratory
12. Electrical service and design laboratory
13. Electrical machine laboratory
14. Power system laboratory
15. Switchgear and protection laboratory
16. Control system laboratory
17. High voltage laboratory
18. Measurement and instrumentation laboratory
19. Satellite communication and microwave engineering laboratory
20. Radio antenna laboratory
21. Mobile cellular communication system laboratory
22. Optical communication laboratory
23. Electronics warfare laboratory
24. Sonar and underwater engineering laboratory
25. Guided weapon system laboratory
MISTতে প্রচুর ক্লাব ফ্যাসিলিটিস আছে। তার মধ্যে একটি হচ্ছে MRC বা Mist Robotics Club যা EECE Department এর অধীনে। তোমারা যারা রোবটিক্সে আগ্রহী তারা এই ক্লাবে জয়েন করে নিজেদের প্রতিভা বিকাশ করতে পার।
EEE job sector in Bangladesh :
এবার আসা যাক জবসেক্টরে। সরকারী যেকোনো প্রকল্পে এবং পাওয়ার প্ল্যান্টে তড়িৎ প্রকৌশলীর দরকার হয়। তবে এক্ষেত্রে প্রচুর মানবসম্পদ যেমন দরকার,তার বিপরীতে প্রার্থীও কিন্তু কম নয় বাংলাদেশে। PGCB, DESCO, DPDC, BREB,BPDB, NPCBL, PWD ইত্যাদি প্রতিষ্ঠানে প্রতি বছর প্রচুর জব সার্কুলার দেয়া হয়।
এগুলো তো গেল পাওয়ার সেক্টর। আর কমিউনিকেশন সেক্টরের জন্য তো বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন সংস্থা,বাংলাদেশ বেতার ইত্যাদিই রয়েছে। এছাড়া বর্তমানে ডাক যোগাযোগের আধুনিকায়ন হওয়ায় দিন কে দিন কমিউনিকেশন সেক্টরের গুরুত্ব ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
ইলেক্ট্রনিক্স রিলেটেড জব করতে চাইলে তোমার জন্য অপেক্ষা করছে সরকারী যেকোনো প্রযুক্তি গ্যাজেট উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান। আর বহির্বিশ্বে বর্তামানে সবচেয়ে বেশি হারে যে সেক্টরের প্রকৌশলীর চাহিদা বাড়ছে তার মধ্যে ইলেকট্রনিক্স অন্যতম। এই যে প্রাচীন বিশাল আকৃতির সুপার কম্পিউটার থেকে আজকের ছোট্ট স্মার্টফোন,এর পুরোটাই কিন্তু ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারদের কৃতিত্ব। চাইলে তুমিও এই জগৎএ বিচরণ করতে পারো। ইন্টেলের মত প্রতিষ্ঠানে আমাদের গ্র্যাজুয়েটরা জব করছে।
এবার আসা যাক বেসরকারী ক্ষেত্রে। বেসরকারী তে ইইসিই থেকে যেতে পারবে অফুরন্ত ক্ষেত্রে। বেসরকারি পাওয়ার প্ল্যান্টসমূহ, সামিট পাওয়ার, যাবতীয় মোবাইল কোম্পানী,সিম কোম্পানী,জিএসএম মডিউল,বায়োমেট্রিক্স,মেকাট্রনিক্স,রোবো মেকানিজম সব প্রতিষ্ঠানই খোলা তোমার জন্য। অর্থাৎ চার বছরে তুমি যদি তোমার পড়াশুনার কাজ টা করে যেতে পারো মিস্টের সার্টিফিকেটের কল্যাণে দেশে-বিদেশে বাকি সব ফ্যাসিলিটিস পাবে তুমি।
অনেকের মনে একটা ডাউট থাকতে পারে যে ডিপার্ট্মেন্টের নামের সাথে C আছে বলে হয়ত চাকুরী ক্ষেত্রে সমস্যা হয়ে থাকে। কিন্তু ব্যাপারটা সঠিক নয়। ইইসিই থেকে পাস করে দেশে বিদেশে মোটামোটি সবাই ভাল ভাল জায়গায় জব করছে। তাই এটা নিয়ে চিন্তা করার কিছুই নেই।
সবশেষে যারা EECE তে পড়তে আসবা তাদের জানাই অভিনন্দন এবং স্বাগতম। কোন ভুল হলে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রইল। আরো তথ্য জানতে ইন্টারনেট অথবা ফেসবুক তো আছেই।
Credit:
মেহরাব ইবনে মাসুদ বাঁধন
EECE – 18
নাজমুস সাকিব
EECE -18